রাজধানীতে প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীকে পাথর মেরে হত্যা: স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভ
ঢাকা, ১২ জুলাই ২০২৫: পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড হাসপাতাল) সংলগ্ন এলাকায় মো. সোহাগ (৪৩) নামে এক ভাঙারি ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে পাথর দিয়ে নির্মমভাবে হত্যার অভিযোগ উঠেছে যুবদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। গত ৯ জুলাই সন্ধ্যা ৬টার দিকে হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের কাছে রজনী ঘোষ লেনে এ ঘটনা ঘটলেও শুক্রবার (১১ জুলাই) ঘটনার ভিডিও ও ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় দেশজুড়ে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভের ঝড় উঠেছে।
নিহত মো. সোহাগ কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পূর্ব নামাবাড়ি গ্রামের ইউসুফ আলী হাওলাদারের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মিটফোর্ডের ৪ নম্বর রজনী ঘোষ লেনে ভাঙারির ব্যবসা করে আসছিলেন। ঘটনার পর পুলিশ এখন পর্যন্ত জনি ও মঈনসহ পাঁচজনকে আটক করেছে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে সাধারণ মানুষ, নাগরিক সমাজ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল থেকে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। এর জেরে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে পদত্যাগ করছেন। এখন পর্যন্ত সারা দেশে আটজন নেতাকর্মী পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।
শুক্রবার (১১ জুলাই) আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (এইউএসটি) শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ব্যক্তিগত ফেসবুক পোস্টে আবেগঘন বার্তায় পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তিনি লিখেছেন, “জন্মলগ্ন থেকে পারিবারিক রাজনীতির সূত্র ধরে দীর্ঘ ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই দলের সঙ্গে জড়িত ছিলাম। ব্যক্তিগত কারণে আমি সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি।” তিনি আরও বলেন, “যেদিন প্রকৃতি স্বচ্ছ বাংলাদেশ বিনির্মাণের ডাক আসবে, আমি মিছিলের অগ্রভাগে থাকবো।”
একই দিনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক সদস্য পারভেজ রানা প্রান্ত, মৌলভীবাজার জেলা শাখার সদস্য মুহাম্মাদ রাব্বি মিয়া, গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজ শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. জাহিমুর রহমান জিসান, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইশতিয়াক রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্যসেন হল শাখার কর্মী মোহাম্মদ আবু সায়ীদ এবং সিলেটের চুনারুঘাটের রানীগাঁও শাখার সহ-সভাপতি আরিফুল ইসলাম ইমরুলও পদত্যাগ করেছেন।
এ ঘটনায় জনমনে ক্ষোভ ও উদ্বেগ বিরাজ করছে। নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক নেতারা দায়ীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
VIDEO LINK - YouTube