সিলেটের পর্যটন অঞ্চলে হরিলুট, সাদাপাথর উজাড় — বিএনপি নেতার পদ স্থগিত, চোর কোথায়?

INFO TODAY BANGLA

সিলেটের সব পর্যটন অঞ্চলে হরিলুট: বিএনপি নেতার পদ স্থগিত, চোর পালানোর পর কি ব্যবস্থা? সাদাপাথর মরুভূমিতে পরিণত
১২ আগস্ট ২০২৫ । মঙ্গলবার

সিলেট: সিলেটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অন্যতম নিদর্শন ভোলাগঞ্জের সাদাপাথর, জাফলং, শাহ আরেফিন টিলা ও ভোলাগঞ্জ-ছাতক রোপলাইন এলাকা থেকে অবৈধভাবে পাথর ও খনিজ সম্পদ লুটপাটের ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে। গত এক বছরে এসব এলাকা থেকে শত শত কোটি টাকার প্রাকৃতিক সম্পদ লুট হয়েছে, যার ফলে পর্যটন কেন্দ্রগুলো ধ্বংসের মুখে। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রভাবশালী মহল ও প্রশাসনের উদাসীনতার সুযোগে এই লুটপাট অব্যাহত রয়েছে।
ভোলাগঞ্জের সাদাপাথর, যা একসময় পর্যটকদের কাছে ছিল স্বপ্নের গন্তব্য, এখন মরুভূমির মতো বিরানভূমিতে পরিণত হয়েছে। পরিবেশকর্মীদের মতে, গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া এই লুটপাটে প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ ঘনফুট পাথর লুট হয়েছে, যার বাজার মূল্য ২০০ কোটি টাকারও বেশি। একসময় ধলাই নদীর উৎসমুখে পাহাড়ি ঢলে জমা হওয়া এই পাথর ২০১৭ সাল থেকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠে। কিন্তু বর্তমানে অবৈধ উত্তোলনের কারণে সাদা পাথরের বিছানা এখন বালুচরে রূপান্তরিত হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবেশকর্মী শাহ শাহেদা বলেন, “এই লুটপাট রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় চলছে। যারা ক্ষমতায় থাকে, তারাই এই ধ্বংসযজ্ঞের পেছনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত। প্রশাসনের নীরবতা এই অপকর্মকে উৎসাহিত করছে।”

এদিকে, সিলেট বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. ফেরদৌস আনোয়ার জানান, অবৈধ পাথর উত্তোলন রোধে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমরা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করছি। এসব এলাকায় পাথর ও বালি উত্তোলন নিষিদ্ধ, এবং এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সিলেট সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম চৌধুরী জানান, “পাথর চুরি রোধে আমাদের টহল জোরদার করা হয়েছে। রাত-দিন টহল চলছে, এবং দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। গত দুই বছরে বেশ কয়েকজনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।”

সাম্প্রতিক ঘটনায়, সাদাপাথরে লুটপাটের অভিযোগে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাহাব উদ্দিনের পদ স্থগিত করেছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। গত ১০ আগস্ট রাতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চাঁদাবাজি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে সাহাব উদ্দিনের পদ স্থগিত করা হয়েছে, এবং হাজী আব্দুল মান্নানকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নিয়োগ করা হয়েছে।
পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, সিলেটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া না হলে পরিবেশ ও বিনিয়োগ দুই-ই হুমকির মুখে পড়বে। স্থানীয়রা দাবি করছেন, কঠোর আইনি ব্যবস্থা ও স্বচ্ছ প্রশাসনের মাধ্যমে এই লুটপাট বন্ধ করা সময়ের দাবি।

VIDEO LINK - YOUTUBE


সত্যের সাথে, সময়ের সাথে – ইনফো টুডে বাংলা

সময়োপযোগী খবর ও তথ্যভিত্তিক আপডেট শেয়ার করার একটি নির্ভরযোগ্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম
To Top