ময়মনসিংহের ভালুকায় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকেও ধামশুর কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি শামীম আল মামুন নিয়মিত বেতন উত্তোলন করছেন; এতে স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয় হতদরিদ্ররা।
ভালুকা (ময়মনসিংহ) | ২১ অক্টোবর, ২০২৫
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার মল্লিকবাড়ি ইউনিয়নের ধামশুর কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি (কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার) শামীম আল মামুনের বিরুদ্ধে গুরুতর অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ মতে, তিনি বছরের পর বছর কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করে আসছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হতদরিদ্র মানুষ প্রতিদিন চিকিৎসার জন্য ক্লিনিকে ভিড় করলেও সেটি অধিকাংশ সময় তালাবদ্ধ থাকে, যার ফলে স্থানীয় জনগণ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এই সিএইচসিপি তার নিয়োগ এবং কর্মস্থলে অনুপস্থিতির সুবিধা নিতে রাজনৈতিক প্রভাবকে কাজে লাগিয়েছেন। আওয়ামী লীগের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান কাজিম উদ্দিন আহমেদ ধনু তার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মামুনকে কমিউনিটি ক্লিনিকে সিএইচসিপি পদে নিয়োগ দেন। ২০১৮ সালে কাজিম উদ্দিন ধনু সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পরও নিয়মনীতি উপেক্ষা করে মামুন প্রায় কখনোই কর্মস্থলে উপস্থিত হননি। অভিযোগ রয়েছে, তিনি তার চাচার এই ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিয়মিত সরকারি বেতন উত্তোলন করে আসছেন।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারানোর পর মামুনের নামে মামলা হয়েছে এবং বর্তমানে তিনি পলাতক রয়েছেন। এরপরও আশ্চর্যের বিষয় হলো, তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে নিয়মিত বেতন প্রবাহিত হচ্ছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তার অনুপস্থিতির সময় মাঝে মাঝে তার বোন মৌসুমি আক্তার বাড়িতে বসেই কিছু ঔষধ সরবরাহ করে থাকেন, যা কমিউনিটি ক্লিনিক পরিচালনার বিধির সম্পূর্ণ পরিপন্থী।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম এক অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেন, “সিএইচসিপি পদটি আমাদের দপ্তরের সরাসরি আওতায় নেই। এগুলো কমিউনিটি ট্রাস্টের অধীনে আসে, তাই আমাদের এই বিষয়ে সরাসরি হস্তক্ষেপ করার বা কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার নেই।”
এই গুরুতর অনিয়মের কারণে একদিকে সরকার বিপুল পরিমাণ অর্থ নষ্ট করছে, অন্যদিকে এলাকার সাধারণ মানুষ তাদের প্রাপ্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। স্থানীয় জনগণ এই অচলাবস্থা নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ দাবি করেছেন। তাদের আহ্বান, অভিযুক্ত শামীম আল মামুনকে দ্রুত চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে নতুন কাউকে নিয়োগ দেওয়া হোক, যাতে ধামশুর কমিউনিটি ক্লিনিকে সরকার প্রদত্ত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা যায়।