রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে কক্সবাজারে তিন দিনব্যাপী এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হয়েছে। ২৪ থেকে ২৬ আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য এই সম্মেলনে ৪০টি দেশের প্রতিনিধি, জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন। সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিজেও ২৫ আগস্ট যোগ দেবেন বলে জানা গেছে।
এই সম্মেলনকে সামনে রেখে সরকার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে মরিয়া বলে মনে করছেন সরকারের ঊর্ধ্বতন মহল। গত ১৪ মার্চ রমজানে কক্সবাজারে লক্ষাধিক রোহিঙ্গার সাথে ইফতার মাহফিলে অংশ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেছিলেন, "আল্লাহর কাছে দোয়া করি, সামনের বার যেন তোমরা নিজের বাড়িতে ঈদ করতে পারো।" সেই প্রতিশ্রুতির ধারাবাহিকতায় ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের আগে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য বর্তমান সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, “এই তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনটি প্রত্যাবাসন কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করতেই আয়োজন করা হয়েছে।” শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমানও জানান, প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে সরকার এই বোঝা নামিয়ে দিতে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তবে এই উদ্যোগের সফলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম বলেন, “রাখাইনের বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ প্রায় শেষের পথে হওয়ায় এই উদ্যোগ খুব বেশি ফলপ্রসূ হবে বলে মনে হয় না।” তিনি আরও বলেন, “ড. ইউনূস যতই চেষ্টা করুন না কেন, তিনি পাঁচজন রোহিঙ্গাকেও প্রত্যাবাসন করাতে পারবেন না। নতুন করে আরও প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে, যা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে।”
অন্যদিকে, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, এই সম্মেলনের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন বিষয়ে আন্তর্জাতিক মনোযোগ ফিরিয়ে আনা এবং তাদের মানবিক অধিকার নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে ১৭০টি দেশের অংশগ্রহণে একটি বড় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে এবং কক্সবাজারের এই সম্মেলনকে তারা তার প্রস্তুতি হিসাবে দেখছেন।