পাঙ্গাস মাছের পায়েস বানিয়ে লাখপতি দুই ভাই, ব্যতিক্রমী স্বাদে মুগ্ধ ক্রেতারা

INFO TODAY বাংলা

জলিলুর রহমান জনি, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী । রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সিরাজগঞ্জ: চাল, দুধ আর চিনির চিরাচরিত পায়েসের বাইরে গিয়ে ভিন্ন স্বাদের এক খাবার তৈরি করে চমক দেখিয়েছেন সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা উপজেলার দুই যুবক। হারুনুর রশিদ ও আশরাফুল নামের এই দুই ভাই পাঙ্গাস মাছ দিয়ে পায়েস তৈরি করে শুধু মানুষের মাঝে কৌতূহলই সৃষ্টি করেননি, এর মাধ্যমে তারা নিজেদের ভাগ্যও পরিবর্তন করেছেন। পাঙ্গাস মাছের পায়েস বিক্রি করে এখন তারা মাসে পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করছেন।

এই ব্যতিক্রমী আইডিয়ার জন্ম হয়েছিল অনেকটা মজার ছলেই। হারুনুর রশিদ একদিন তার ভাইকে বলেছিলেন মাছ দিয়ে পায়েস বানানোর কথা। সেই মজার প্রস্তাবই পরে তাদের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। তারা পাঙ্গাস মাছ ছোট টুকরো করে ভেজে নেন। এরপর সেই মাছ ঘন দুধ, চাল, চিনি, বাদাম, কিশমিশ ও ঘি দিয়ে তৈরি প্রচলিত পায়েসের সাথে মিশিয়ে পরিবেশন করেন।

প্রথমদিকে পরিবার ও প্রতিবেশীরা অবাক হলেও, এই নতুন স্বাদের পায়েস খেয়ে সবাই প্রশংসা করেন। এরপর তারা এই রান্নার একটি ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করেন, যা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। দেশের পাশাপাশি বিদেশেও ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই প্রথমে অবিশ্বাস করলেও, অসংখ্য মানুষ এই অভিনব খাবারটি চেখে দেখতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।

ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর হারুনুর রশিদ ও আশরাফুলের বাড়িতে ভিড় বাড়তে থাকে। স্থানীয় গ্রাম থেকে শুরু করে দূর-দূরান্ত থেকেও অনেকে শুধু এই বিশেষ পায়েস খাওয়ার জন্য ছুটে আসেন। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দুই ভাই বাণিজ্যিকভাবে এটি বিক্রি শুরু করেন। তাদের দোকানে এখন প্রতিদিন ক্রেতাদের ভিড় লেগে থাকে। শুরুতে প্রতিদিন কয়েক হাজার টাকা আয় হলেও, বর্তমানে তাদের মাসিক আয় পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকায় পৌঁছেছে। এছাড়াও, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও আপলোড করে বিজ্ঞাপন থেকেও তাদের বাড়তি উপার্জন হচ্ছে।

প্রথমবার এই পায়েস খেয়ে এক বৃদ্ধ কৃষক মজার ছলে বলেন, "জীবনে মাছের ভর্তা, ঝোল অনেক খেয়েছি। কিন্তু মাছের পায়েস খাব, তা ভাবিনি। খাওয়ার পর বুঝলাম, এর স্বাদ অসাধারণ!" এক তরুণ ক্রেতা জানান, "ইউটিউবে ভিডিও দেখে এখানে এসেছি। সত্যি বলতে, শুরুতে বিশ্বাস হচ্ছিল না। কিন্তু খাওয়ার পর মনে হলো, বারবার আসতে হবে।"

হারুনুর রশিদ ও আশরাফুল জানান, মানুষ সবসময় নতুন কিছু খুঁজে। তারা সেই সুযোগটি কাজে লাগিয়েছেন। তাদের এই সাফল্য এখন গ্রামীণ তরুণদের জন্য এক অনুপ্রেরণার গল্প, যা প্রমাণ করে যে সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়েও স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব।

সত্যের সাথে, সময়ের সাথে – ইনফো টুডে বাংলা

সময়োপযোগী খবর ও তথ্যভিত্তিক আপডেট শেয়ার করার একটি নির্ভরযোগ্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম
To Top