সাভার, ঢাকা: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের আচরণবিধি ভঙ্গ করে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করা দুই ছাত্রদল নেতার ছবি ধারণ করায় একজন সাংবাদিকের ফোন কেড়ে নিয়ে ভিডিও মুছে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। জাকসু নির্বাচনের ব্যালট বাক্স পরিবহনের সময় ওই দুই নেতা নির্বাচন কর্মকর্তাদের পাশে হাঁটছিলেন, আর সেই দৃশ্য মুঠোফোনে ধারণ করেছিলেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত দুই ছাত্রদল নেতা হলেন জাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবর এবং যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান রোজেন। ভুক্তভোগী সাংবাদিক ওসমান সরদার দৈনিক যায়যায়দিনের জাবি প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী সাংবাদিকের ভাষ্য অনুযায়ী, তথ্য সংগ্রহের জন্য সাংবাদিক ওসমান সরদার নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে গেলে তিনি দেখেন ব্যালট বাক্স নিয়ে নির্বাচন কর্মকর্তারা বেরিয়ে আসছেন। তাদের পাশেই হাঁটছিলেন ছাত্রদলের দুই নেতা। এই দৃশ্য দেখে সাংবাদিক তার ফোনে ভিডিও ধারণ শুরু করেন। বিষয়টি নজরে এলে ছাত্রদল নেতা মশিউর রহমান রোজেন তার ফোনটি কেড়ে নিয়ে ভিডিওটি মুছে ফেলেন। পরে সাংবাদিক নিজের পরিচয় দিলে রোজেন এমন ভিডিও ধারণ করতে নিষেধ করেন।
সাংবাদিক ওসমান সরদার বলেন, “আমি ব্যালট বাক্স নিয়ে যাওয়ার ভিডিও করছিলাম। পেছনে ছাত্রদলের বাবর ভাই ও রোজেন ছিলেন। রোজেন আমার কাছ থেকে ফোন নিয়ে ভিডিও ডিলিট করে দেয়। আমি এ নিয়ে খুবই চিন্তিত। আজ যদি এমন অবস্থা হয়, তাহলে আগামীকাল নির্বাচনের দিন কী হতে পারে?”
এ বিষয়ে জাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবর বলেন, “এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমি তো ওইখানেই ছিলাম। ভিডিও ডিলিট করে নাই। কী ভিডিও ডিলিট করছে, সেটাও তো জানি না। বিষয়টি আমি তদন্ত করে দেখব।”
জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ড. এ বি এম আজিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১০ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আবাসিক হল ও ক্যাম্পাসে যেকোনো ধরনের বহিরাগত ব্যক্তি অবস্থান করতে পারবেন না। জাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান রোজেনও প্রাক্তন শিক্ষার্থী। প্রশাসনের এই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, তাদের দুজনেরই নির্বাচন চলাকালীন ক্যাম্পাসে থাকার কথা নয়।