ভালুকা, ময়মনসিংহ | বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ভালুকা, ময়মনসিংহ: ভালুকার ৫ নং বিরুনীয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান শামছুল হোসাইনের বিরুদ্ধে 'আওয়ামী দোসর' হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে মিল্লাত সরকার নামে এক ব্যক্তি এই অভিযোগ করেন। এর প্রতিক্রিয়ায় বুধবার পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন চেয়ারম্যান।
চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগসংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মিল্লাত সরকার অভিযোগ করেন, সম্প্রতি শামছুল হোসাইনের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ক্যাডাররা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের ভেতরে সভা করেছে, যা দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে। তিনি বলেন, চেয়ারম্যান পদে থেকে তিনি আওয়ামী রাজনীতির পৃষ্ঠপোষকতা করছেন। মিল্লাত সরকারের দাবি, শামছুল হোসাইন বিগত নির্বাচনে ভোট চুরির মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং এরপর থেকে তিনি সব আওয়ামী লীগ কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। এমনকি জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এমএ ওয়াহেদের নির্বাচনী প্রচারণাতেও তিনি সক্রিয় ছিলেন। মিল্লাত সরকার বলেন, গত ১৫ বছরে বিএনপির কোনো কর্মসূচিতে শামছুল হোসাইনকে দেখা যায়নি। তিনি এই 'আওয়ামী দোসর'কে চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে শাস্তির দাবি জানান।
চেয়ারম্যানের পাল্টা সংবাদ সম্মেলন
মিল্লাত সরকারের অভিযোগের জবাবে বুধবার সকালে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন চেয়ারম্যান শামছুল হোসাইন। তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। তিনি বলেন, বিগত নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়লাভের পর থেকে তিনি সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন।
ভাইরাল হওয়া ভিডিও প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভিডিওতে যে কক্ষে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি দেখা গেছে, সেটি ইউনিয়ন পরিষদের কোনো কক্ষ নয়, বরং উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার নামে বরাদ্দকৃত একটি অব্যবহৃত রুম। তিনি আরও দাবি করেন, ওই কক্ষের কোনো চাবি তার বা কোনো ইউপি সদস্যের কাছে নেই। তিনি জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কোনো সত্যতা পায়নি।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি প্রসঙ্গে শামছুল হোসাইন বলেন, যে ছবিকে এমএ ওয়াহেদের নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে দাবি করা হয়েছে, সেটি প্রকৃতপক্ষে একটি রাস্তা উদ্বোধনের ছবি, যেখানে এমএ ওয়াহেদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, তার আপন মামা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, তবে তাদের রাজনৈতিক অবস্থান ভিন্ন। তিনি নিজেকে ছাত্রজীবন থেকেই ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এবং বর্তমানে জাসাস কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে পরিচয় দেন।
শামছুল হোসাইন অভিযোগ করেন, কিছু মহল তাকে আওয়ামী দোসর সাজানোর চেষ্টা করছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এটি তার প্রতিপক্ষের হীনমন্যতা ও অপপ্রচার বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি জনগণকে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ করেন এবং আশা প্রকাশ করেন যে এই ব্যাখ্যার মাধ্যমে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটবে।