ময়মনসিংহের ভালুকায় এক স্পিনিং মিলের কর্মকর্তার মরদেহ কারখানার টয়লেটে আটকে পড়ে পাওয়া গেছে, পরিবার অভিযোগ করেছে পরিকল্পিত হত্যার।
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় অবস্থিত ‘আরিফ স্পিনিং মিলে’ কর্মরত মো. রবিউল ইসলাম (৪৫) নামে এক কর্মকর্তার রহস্যময় মৃত্যু এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। গত বুধবার, ৮ অক্টোবর, সন্ধ্যায় কারখানার ভেতরে একটি টয়লেটে আটকে পড়ে তাঁকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। দ্রুত তাঁকে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলেও কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে খবর পেয়ে ভালুকা মডেল থানার পুলিশ হাসপাতাল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছেন ভালুকা মডেল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. আবদুল মালিক।
স্থানীয় সূত্র ও কারখানার ডেপুটি ম্যানেজার আরিফুল ইসলাম জানান, দীর্ঘ সময় ধরে রবিউল ইসলামকে কারখানায় দেখা যাচ্ছিল না। এক পর্যায়ে এক শ্রমিকের নজরে আসে যে, কারখানার একটি টয়লেটের দরজা অস্বাভাবিকভাবে বন্ধ রয়েছে। দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করলে রবিউলকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁকে তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু চিকিৎসক তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
অপরদিকে, নিহতের স্ত্রী নাজমা আক্তার এবং ছেলে সাইম অভিযোগ করেছেন যে, রবিউল ইসলামকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তাঁরা ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত ও দ্রুত বিচার দাবি করেছেন। নিহত রবিউল ইসলাম নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার মেঘশিমুল গ্রামের অধিবাসী এবং মৃত রইজ উদ্দিনের পুত্র।
এ ঘটনায় স্থানীয় মহলে নানা মত ও অনুমান ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন, টয়লেটে আটকে পড়ে হৃদরোগ বা অন্য কোনো স্বাস্থ্য জটিলতায় তিনি মারা গেছেন। আবার কেউ কেউ পরিবারের অভিযোগকে সমর্থন করে বলছেন, এটি হতে পারে কোনো অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অংশ। পুলিশ এখন ময়নাতদন্ত রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছে এবং প্রয়োজনে কারখানার কর্মী ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা জানিয়েছে। এলাকাবাসী ও শ্রমিক মহল ঘটনার সত্য উদ্ঘাটন ও দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন।